Sunday, September 4, 2016



Poetry
of


Tahirih escaping from Tehran.jpg
(তেহরান থেকে পলায়ন)




Tahirih



১)

(ইংরেজি অনুবাদ:ফারজানেহ মিলেনি)

ও ঘুমকাতর, প্রিয় এসেছে দুয়ারে, 
জাগো 

ঘুম-কণা গুলো ঝেড়ে শুদ্ধ শরীর জেগে ওঠো  
জাগো 

চেয়ে দেখো, আনন্দ এসেছে ঘরে,
না, অশ্রু জলে এসো না এ আনন্দ ভবনে  
জাগো

তাবৎ-দূঃখ-লাঘব-তিনি এসেছেন
ও ভারাক্রান্ত হৃদয় 
ও বিরহী আত্মা
জাগো 

বসন্ত এসেছে গেছে  
জাগো 

চেয়ে দেখো 
নবীন বর্ষ আনে নবীন প্রাণ 

হে নেতানো শস্য, 
ত্যাজ্য হোক বিগতের বিশীর্ন জরা  

জাগো











২)

(ইংরেজি অনুবাদ: আর্থার জে. আরবেরি)

যদি কখনো দেখা হয় মুখোমুখী, আর দৃষ্টি যদি স্থির হয় দৃষ্টিতে তোমার জন্যে হৃদয়ে জমানো সমস্ত ব্যাথার পুংখানুপুংখ বর্ণনা দিবো
আমি থাকবো তোমার কপোল-সন্নিহিতমৃদু-বহা হাওয়ার মতো ঘুরে বেড়াবো ঘর থেকে ঘরদ্বার থেকে দ্বারগলি থেকে গলিরাজপথ থেকে রাজপথ 

আমার হৃদয় থেকে বিচ্যুত আর আমার হৃদয়ের রক্ত-বহ অক্ষি হতে নদী থেকে নদীসমুদ্র থেকে সমুদ্রফোয়ারা থেকে ফোয়ারাঝর্না থেকে ঝর্ণা 

আমার তাপিত হৃদয় তোমার ভালোবাসার তন্তুতে বুনে চলে আমার আত্মার গেলাপ তন্তু থেকে তন্তু টুশি থেকে টুশিভাঁজ থেকে ভাঁজজমি থেকে জমি

তাহিরা পুনর্বার গড়ে তুললো তার ভাঙা হৃদয় আর সেখানে তুমিই শুধু অনন্ত দৃশ্যমান পত্র থেকে পত্রভাঁজ থেকে ভাঁজআবরণ থেকে আবরণপর্দা থেকে পর্দা









৩)

(ইংরেজি অনুবাদ: এডওয়ার্ড গ্রানভিল ব্রাউনে)

তোমার মুখশ্রী থেকে বিকীর্ণ রশ্মি উর্ধমুখী হলো;
বললো,
“আমি কি তোমার প্রভু নই?”
“নিশ্চয়, নিশ্চয় !”
ধ্বনিতে উচ্চকিত হলাম আমরা


ঢোলকের উচ্চ্-নাদ উন্মাদনার সাথে দামামাও  জিজ্ঞাসা করলো,
“আমি কি নই ?”
হৃদয়ের সমুদয় দরজায় অযুত পদধ্বনি 
আসন্ন দুর্যোগ।

সুন্দর এক চন্দ্রিমার ভালোবাসাই যথেষ্ট - আমি ভাবি,
অথচ ও হাসে কষ্টের অভিলাষে।


যখন পরাভূত সে তখন উল্লাসে চিৎকার করে,
“আমি কারবালার মৃত্যুঞ্জয়ী
আমার কষ্টকীর্ন মৃত্যুর সংগীত শুনে সে সংগ্রহ করলো সৎকার-সামগ্রী
কাছে এলো আমার শবাধারের
কাঁদলো এবং বিলাপ করলো।


কি ক্ষতি হতো যদি অগ্নিভ বিস্ময়ে প্রজ্জলিত হতো
আমার সিনাই-সদৃশ হৃদয় - যা’ তুমি নির্মাণ করেছো অতীব ত্বরায়
অথচ
ভেঙে দিলে অতীব নির্মমতায়?


ভালোবাসার রাত্রি-ভর মহাভূজ-সমাগমে দেবশিশুরা দীর্ঘ্য ঘন্টাধনিতে অনির্বচনীয়ের  ডাক পাঠায়;
“ও দুঃখ-প্রপঞ্চিত মানব, 
ঘুরন-পাকে ঘুরে মরা মৎসের সাঁতার কি তোমাকে নিয়ে যায় না অস্তিত্বের সমুদ্র-বিস্তারে?
বসো, তাহিরার মতো চুপ বসে থাকো
জলের গহ্বরে শুনো বার্তা পাঠায় অতিকায় তিমি"

‘নাস্তি’ 

এবং
তাহার অন্তহীন দীর্ঘ্য-শ্বাস









৪)

(ইংরেজি অনুবাদ:ফারজানেহ মিলানি)


তোমার প্রেমের প্রত্যাশায় 
আমি জর্জরিত
কেন দূরে রাখো
আমি ক্লান্ত
বিরহ কাতর


ঘোমটা টানা আনন
অনিন্দ্য
অবিন্যস্ত কুন্তল
লোক-সংস্পর্শ-হীন
আমারই মতো
একা


তুমি মধু ও দুগ্ধ
তুমি বৃক্ষ
তুমি ফল ও ফসল
তুমি সূর্য 
তুমিই চন্দ্র
আমি  ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র  

তুমি খেঁজুর বৃক্ষ
তুমিই খেঁজুর
তুমি আমার মধুর-ওষ্ঠ
তুমিই বিশেষ
প্রভু আমার
প্রিয় আমার


আমি তোমার অবাধ্য ভৃত্য
তুমি মক্কা
তুমিই সেই 
এক একক

তুমি মন্দির
তুমি মাজার
তুমি প্রিয়
তুমি সম্মানিত সেই 
এক একক


আমি তোমার ভারাক্রান্ত প্রেমিক
“কাছে এসো ”
ভালোবাসা উদ্বেলিত হলো 
বললো,
“আমি শ্লাঘা-হীন ও নিখাঁদ
আমি 
সেই 
এক ও এককের অবতার


তাহিরাহ 
তোমার পায়ের পাতার এক মুঠো ধূলি
তাহিরাহ
তোমার মুখশ্রীর আনন্দ-মদিরায় মাতাল

তাহিরাহ এখন বরপ্রার্থী  









৫)

(ইংরেজি অনুবাদ: সুসান স্টাইলস মানেক ও ফারজাদ নাখাঈ)

ঠোঁটের কোনে একখানা তিল 
আর কৃষ্ণ দুখান চুল
ভালোবাসার হৃদয়-পাখি 
আহা,
এ যেন হায় দুইটি ফাঁদ আর 
একটি খুদের দানা


একজন কোতোয়াল
একজন যাজক 
ও আমি
আমরা তিন জনা
কথা হচ্ছিল ভালোবাসার:

আমার যে এক সিদ্ধ
বাকী দুই কাঁচা
কেমন করে কথা বলি 
বাঁচা আমায় বাঁচা


দয়িতের মুখের আর কেশ-গুচ্ছের ছায়ায় আমার দিনগুলো রাত্রিময়


আহা
দিনের দুই পাশে বসে আছে দুই নিশি ...









৬)

(ইংরেজি অনুবাদ:ফারজানেহ মিলানি)


আমি কি উন্মোচিত করবো আমার সুবাসিত কেশ-গুচ্ছ
আমি কি খর্ব করবো প্রতিটি হরিণীর উন্মুক্ত স্বাধীনতা
আমি কি কাজল এঁকে দেবো আমার নার্সিসাস চোখের পাতায়


বাসনার তীব্র ক্ষেপনে আমি ধ্বংস করবো সসাগরা বসুন্ধরা
আমার মুখশ্রী অবলোকনের জন্যই প্রতিটি প্রদোষে
স্বর্গাধিপতি তুলে ধরেন তার স্বর্ণাভ দর্পন


কোনোদিন যদি কোনো গির্জার পথে 
ঘুরে যায় আমার গমন
ঠিক জেনো মতান্তরিত হবেই হবে 
সেই সব ক্রিশ্চান বালিকা  










৭)

(ইংরেজি অনুবাদ : এডওয়ার্ড গ্রানভিল ব্রাউনে)


কেউ যদি সঙ্গী হয় আমার যাত্রা পথে
আমি ক্রন্দনে তাকে জানিয়ে দেবো
যে আমার প্রেমিকের জন্যে
নির্ধারিত আছে
অবধারিত দুঃখ আর জরা


আর যাহারা শুনবে না আমার নির্দেশ
অথবা চাইবে না আমার আশ্রয় ছায়া  
আশ্রম থেকে সে হবে বিতাড়িত
আমি তাকে অচ্যুত করবো অনন্ত নাস্তি’ র
ঝোড়ো হাওয়ায়


আমি চিরন্তনী জগতের
অসীম ও আদিম
যে জগৎ মুক্ত ও ওপার
আমি সেই জগতের
এক ও একক


আমি এসেছি সেই সব আত্মা ও হৃদয়ের জন্য
যারা আধ্যাত্মিক;
এবং
তাঁহারাই অতঃপর
সন্নিহিত









৮)

(ইংরেজি অনুবাদ: সুসান স্টাইলস মানেক ও ফারজাদ নাখাঈ)


দিক নির্দেশের প্রভাত
হাওয়াকে বহমান হতে নির্দেশ দিলো
আলোকিত হলো পৃথিবী, দিগন্ত ও সমুদয় মানুষ
শায়েখ শঠতা-মুক্ত
পবিত্রতার পণ্য-বাজার থেকে মুক্ত মসজিদ
অন্ধ-মূল থেকে ছিন্ন পাগড়ির বন্ধন
চাকচিক্য আর গোপনের অন্ধ কোঠর থেকে অবমুক্ত শায়েখ
আলোয় আলোময় হলো সমুদয় অশুভ সংস্কার
ও উদ্যত বাসনা
লাম্পট্য ও লালসার গড্ডালিকা থেকে মুক্ত মানুষ  
সুবিচারে শাসিত হলো অপশাসন ও অত্যাচার
সংবেদনে পরাভূত হলো অজ্ঞতা
বিচারের গালিচা বিস্তারিত হলো  
এখানে ওখানে ও সবখানে
অংকুরিত হলো একতা আর বনধুতার
চিরন্তনী বীজ
পৃথিবী থেকে নির্বাসিত হলো  
সমুদয় অশুভ প্রজ্ঞাপন
নির্বাপিত হলো সমুদয় বিরুদ্ধ নীতি

একতার ঐশ্বর্য্যে









৯)

(ইংরেজি অনুবাদ: মাসুদুল হাসান)

তুমি ভালোবাসো 
ক্ষমতা সম্পদ 
ও সাম্রাজ্য

আমি ভালোবাসি 
ক্ষুৎপিপাসা 
ও নিশ্চিত বিশ্বাস

সাম্রাজ্য চাও যদি - সেই তো তোমার
অনটন ও বিশ্বাস - থাকুক সে আমার  


(তাহিরিহ কোন শিরোনাম দেন নি বলে এই কবিতা সমূহ শিরোনাম-হীন রয়ে গেলো)